‘মৌলিক গণতন্ত্র আইন’ ঘোষিত

<2.009.030>

 

শিরোনাম সূত্র তারিখ
‘মৌলিক গণতন্ত্র আইন’ ঘোষিত পাকিস্থান অবজার্ভার ২৭শে অক্টোবর, ১৯৫৯

 

মৌলিক গণতন্ত্র আদেশের জারি

কাউন্সিল পোলএর জন্য প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটাধিকার

পাঁচ স্তর এর প্রাথমিক ধারনা ব্যাখ্যা.

 

          ২৬শে অক্টোবর, করাচী – “মৌলিক গণতন্ত্র আদেশ. ১৯৫৯” আজ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জারি করা হয় “পাকিস্তান ব্যাপী মৌলিক গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের সংবিধান প্রদান করতে এবং একত্রীকরণ ও স্থানীয় সরকার সংক্রান্ত কতিপয় আইন সংশোধন করতে।”

          প্রথম প্রবন্ধ (সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন) এবং প্রবন্ধ III (সংজ্ঞাসমূহ) তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকারি হয়ে উঠা এবং আদেশের অবশিষ্ট বিধান বলবৎ হয় “সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা এতদুদ্দেশ্যে নিযুক্ত, এমন সমস্ত এলাকায় যে কোন দিনে সরকার পারে।”

           এই আদেশ সমগ্র পাকিস্থানে প্রযোজ্য কিন্তু “কোন স্থানীয় এলাকার পরিস্থিতি এমন যে আদেশের কোন বিধান তৎপ্রতি উপযুক্ত নয় তবে সরকার সেই বিধানের কার্যকলাপ হতে স্থানীয় এলাকার বা এর কোন অংশ গ্রহণ করতে পারে” ব্যতিক্রম হিসেবে এমতাবস্থা জারি থাকলে সরকার সেই বিষয় নিয়ন্ত্রণের জন্য  বাদ দেওয়ার বিধি প্রণয়ন করতে পারবে।

          এই আদেশ মৌলিক গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান সংবিধান প্রদানের জন্য প্রাদেশিক উন্নয়ন উপদেষ্টা কাউন্সিল হতে বিন্যস্ত করা হয়। এই আদেশে অবস্থিত  ইউনিয়ন পরিষদ (গ্রামাঞ্চলে), (নগরের জন্য) নগর কমিটি এবং পৌর এলাকার জন্য ইউনিয়ন কমিটি যাতে নির্বাচন প্রাপ্তবস্কদের ভোটাধিকারে অনুষ্ঠিত হবে।

          একটি ইউনিয়ন পরিষদের (গ্রামাঞ্চলে) এর নিযুক্ত মোট সদস্য সংখ্যা “এর নির্বাচিত মোট সদস্য সংখ্যার অর্ধেকের বেশি হইবে না” এবং কোন আধিকারিক কোন ইউনিয়ন পরিষদ, ইউনিয়ন কমিটি বা টাউন কমিটির সদস্য হতে পারবে না।

          পৌর সংস্থা বা করাচিস্থ ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড, ঢাকা এবং লাহোরের বিচারব্যবস্থায় ইউনিয়ন বা নগর কমিটিতে নির্বাচিত এবং নিযুক্ত সদস্য সংখ্যা  ছাড়া এর কাঠামো সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার দ্বারা নির্ধারিত হতে পারে। করাচি, ঢাকা এবং লাহোরে নির্বাচিত এবং নিযুক্ত সদস্য সংখ্যা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হবে।

 

গ্রাম পুলিশ বাহিনী

          সরকার সেই সব গ্রামাঞ্চলে যখন তৃতীয় তফসিলে উল্লেখিত দায়িত্ব পালনের জন্য গ্রাম কোতোয়াল হতে বিভিন্ন সময়ে প্রজ্ঞাপিত হয়েছে সেখানে গ্রাম পুলিশ বাহিনী প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং  গ্রাম কোতোয়াল এর প্রধান হিসেবে ক্ষমতার মাধ্যমে “ম্যাজিস্ট্রেট হতে কোন আদেশ ছাড়া এবং পরোয়ানা ছাড়াই” আমলযোগ্য অপরাধে যে কোন ব্যক্তিকেই গ্রেফতারে অগ্রসর হতে পারে।      

 

<2.009.031>

 

          যেখানে জেলা প্রশাসনের প্রধান এ বিষয়ে দৃঢ় নিশ্চিত যে জননিরাপত্তায় গ্রামের প্রতিরক্ষা নিরাপদ করতে বিশেষ ব্যবস্থার প্রয়োজন রয়েছে, এই আদেশের মাধ্যমে, তিনি প্রয়োজনে ইউনিয়নের বাসিন্দাদের মধ্যে সক্ষম সকল বা যে কোন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির কোন মেয়াদের জন্য টহলের দায়িত্বে নিয়োজিত হবেন বলে আদেশে উল্লেখ করতে পারেন।

 

দ্বিতীয় স্তর

 

          মৌলিক গণতন্ত্রে দ্বিতীয় স্তর হচ্ছে পূর্ব পাকিস্থানের জন্য থানা কাউন্সিল এবং পশ্চিম পাকিস্থানের জন্য তেহসিল কাউন্সিল। এরা তাঁদের বিচারব্যবস্থায় ইউনিয়ন কাউন্সিল এবং নগর ও ইউনিয়ন কমিটির সকল কার্যক্রমের সমন্বয় সাধন করবেন। থানা কাউন্সিল তাঁদের দায়িত্ব পালনে সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদের নিকট দায়বদ্ধ থাকবেন।

 

          থানা কাউন্সিল সেইসব প্রতিনিধিত্বকারী সদস্যদের দ্বারা যারা সরকারী এবং মনোনীত বেসরকারী (নিযুক্ত) সদস্য গঠিত হবে যা কমিশনার কর্তৃক নির্ধারিত হবে। থানা কাউন্সিলের সদস্য পদাধিকারবলে (প্রতিনিধি) ইউনিয়ন পরিষদ এবং ইউনিয়ন ও নগর কমিটির চেয়ারম্যান হবেন। কাউন্সিলের সরকারী এবং মনোনীত মোট সদস্য সংখ্যা এর প্রতিনিধিত্বকারী সদস্যদের মোট সংখ্যার অর্ধেকের বেশী হতে পারবে না। উপঃআঞ্চলিক অফিসার, পদাধিকারবলে সদস্য এর চেয়ারম্যান হবেন।

 

তৃতীয় স্তর

 

          তৃতীয় স্তর হবে জেলা পরিষদ। জেলা পরিষদের পদাধিকারবলে (সরকারী) সদস্য থানা বা তেহ্‌সিল পরিষদের এবং পৌর সংস্থার চেয়ারম্যান ও জেলার মধ্যে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের ভাইস-প্রেসিডেন্ট এবং তৎপ্রকার বিভাগের প্রতিনিধিরা সরকার কর্তৃক উল্লিখিত হবে ও বিভাগীয় কমিশনার কর্তৃক নিযুক্ত হবেন। জেলা পরিষদের নিযুক্ত বেসরকারী সদস্যদের মোট সংখ্যা কিছুতেই তার মোট সরকারী সদস্য সংখ্যার চাইতে কম হবে না এবং অন্তত এর অর্ধেক ইউনিয়ন কাউন্সিল এবং নগর ও ইউনিয়ন কমিটিগুলোর চেয়ারম্যানদের মধ্য হতে মনোনীত হতে হবে। জেলার কালেক্টর পদাধিকারবলে সদস্য ও চেয়ারম্যানও হবেন

 

চতুর্থ স্তর

 

          চতুর্থ স্তরে বিভাগীয় কাউন্সিল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (মৌলিক গনতন্ত্রে কালেক্টদের নতুন ক্ষমতার মধ্যে) এবং তৎপ্রকার সরকারী বিভাগের ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের এবং পৌর সংস্থার প্রতিনিধি দ্বারা গঠিত হবে যারা সরকার কর্তৃক মনোনীত পদাধিকারবলে বিভাগীয় কাউন্সিলের সদস্য হতে পারে পারে। বিভাগীয় পরিষদের নিযুক্ত বেসরকারী সদস্যদের মোট সংখ্যা কিছুতেই তার মোট সরকারী সদস্য সংখ্যার চাইতে কম হবে না এবং বিভাগে নিযুক্ত সদস্যদের অন্তত অর্ধেক ইউনিয়ন কাউন্সিল এবং নগর কমিটি ও ইউনিয়ন কমিটিগুলোর চেয়ারম্যানদের মধ্য হতে মনোনীত হতে হবে। বিভাগীয় কমিশনার পদাধিকার বলে পরিষদের একজন সদস্য এবং এর চেয়ারম্যান হবেন।

 

উপদেষ্টা পরিষদ

 

          এরপর দুইটি প্রাদেশিক উন্নয়ন উপদেষ্টা কাউন্সিল থাকবে। এদের প্রত্যেকটি সেইসব সরকারী সদস্য এবং নিযুক্ত সদস্য দ্বারা গঠিত হবে যা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্ধারিত হতে পারে।

 

 

 

 

<2.009.032>

 

নিযুক্ত বেসরকারী সদস্যদের মোট সংখ্যা কিছুতেই সরকারী সদস্যদের মোট সংখ্যার চাইতে কম হতে পারবে না।

 

          এইসব কাউন্সিল ও কমিটির কার্যালয় পাঁচ বছরের জন্য হবে সেইদিন হতে যেদিন থেকে সংশ্লিষ্ট কমিটি বা কাউন্সিল কার্যালয় শুরু হবে।

 

          ইউনিয়ন পরিষদ বা শহর বা ইউনিয়নের নির্বাচণের উদ্দেশ্যে ইউনিয়ন বা শহরকে ওয়ার্ডে বিভক্ত করা হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্বাচিত সদস্যদের সংখ্যা কমিশনার বা ক্ষেত্রমতে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হবে। নির্বাচন পূর্ববর্তী প্রার্থীদের বয়স জানুয়ারির প্রথম দিনে হতে ২৫ বছরের কম হতে পারবে না। ইআই৩ডিও বা সমরূপ আইনের অধীনে নির্বাচিত সংস্থা হতে ব্যক্তির সদস্যতা এই নির্বাচণের প্রার্থীতা হতে বাতিল হবে যদিও তারা তাঁদের ভোট প্রদান করতে পারবেন।

 

          যেইসব সদস্যের জনগণকে সেবার প্রদানের ক্ষমতা আছে তাদের ইউনিয়ন পরিষদ এবং ইউনিয়ন ও শহর কমিটিতে নিয়োগ করা যাবে।

 

          সংখ্যালঘু ও নারী এবং কৃষি, শিল্প ও সম্প্রদায়ের উন্নয়নের সাথে সংশ্লিষ্ট সংগঠনকে বিশেষ বিবেচনায় ইউনিয়ন কাউন্সিল ও ইউনিয়ন এবং নগর কমিটিতে নিয়োগ দেওয়া হবে।

Scroll to Top