বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব কানাডার মুখপত্র ‘বাংলাদেশ’-এর সম্পাদকীয়, এসোসিয়েশনের কর্মতৎপরতা ও প্রাসঙ্গিক তথ্যাদি

<৪,১৬৯,৩৩৪-৩৩৭>

অনুবাদকঃ নাজিয়া বিনতে রউফ

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৬৯। বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব কানাডার মুখপত্র ‘বাংলাদেশ’-এর সম্পাদকীয়, এসোসিয়েশনের কর্মতৎপরতা ও প্রাসঙ্গিক তথ্যাদি মুখপত্র ‘বাংলাদেশ’ ১৫,৩১ অক্টোবর, ১৯৭১

 

বাংলাদেশ ১৫ই  অক্টোবর,১৯৭১

সম্পাদকীয়

বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনগণ পাঁচ দলীয় দূতাবাসীয় কমিটি গঠনকে সাদরে গ্রহণ করেছে এবং এই ঘটনা স্বাধীনতা যুদ্ধে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এটি গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে ঐক্য ও আস্থা আরও দৃঢ় করেছে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে অর্থপূর্ণ সমন্বয় তৈরীর পথ খুলে দিয়েছে। বাংলাদেশে জনগণের পক্ষের দলগুলোর মধ্যে সহযোগীতার কারণে কৃষক, চাকরীজীবি, ছাত্র ও বুদ্ধিজীবিদের মধ্যে ঐক্যের বন্ধন ও ভ্রাতৃত্ব আরও জোরদার হয়েছে। এটি কোন আশ্চর্যের বিষয় নয় যে বর্তমানে যারা দুষ্ট ও বিভ্রান্তিকর প্রচারণা ছড়ানোর মাধ্যমে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে আমাদের কর্মীদের মধ্যে বিভেদ তৈরী করতে, সেই সাম্রাজ্যবাদী ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির চক্ষুশূল হয়ে দাড়িয়েছে এই একীভূত ঐক্য। তারা এমন একটা ধারণা তৈরী করার চেষ্টা করছে যে বৈদেশীক চাপের মাধ্যমে দূতাবাসীয় কমিটি গঠন করে তা বাংলাদেশের সরকারের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। তারা হঠাৎ করে খুব সহানুভূতিশীল হয়ে গেছে(১) এবং বলছে যে চলমান সঙ্কটের একমাত্র সমাধান হচ্ছে ‘পূর্ব-পাকিস্তান’-এ পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্বশাসন। চারিদিকে গুজব ছড়ানো হচ্ছে যে বাংলাদেশ খুব শীঘ্রই স্বাধীন হতে যাচ্ছে।

বাংলার ইতিহাস সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে অবিরত সংগ্রামের ইতিহাস। বাংলার সাধারণ মানুষ কখনো বিদেশী প্রভূদের কাছে মাথা নত করেনি এবং কখনও করবেও না। যখন মস্কো, ওয়াশিংটন বা পিকিং-এ বৃষ্টি হয় তখন আমরা আমাদের মাথায় ছাতা ধরায় বিশ্বাসী নই, তাই আমাদের বর্তমান স্বাধীনতা সংগ্রামের ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য। সুতরাং আমাদের উপর কারো কোন শর্ত আরোপ করার প্রশ্নই উঠে না। গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে উঠেছে, এজন্যে নয় যে এতে বিদেশী শক্তির স্বার্থ সিদ্ধি হবে বরং এজন্যে যে এটাই বাংলাদেশের জনগণের ঐকান্তিক ইচ্ছা ছিল। অপরপক্ষে ব্যাপকভিত্তিক দূতাবাসীয় কমিটি গঠনের কারণে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী শিবিরে আমাদের জন্যে সম্মান ও সমর্থন তৈরী হয়েছে।

যারা ভবিষ্যতবাণী করছে যে বাংলাদেশ খুব শীঘ্রই স্বাধীন হতে যাচ্ছে, তারা ইচ্ছাকৃতভাবে হোক বা অজ্ঞতাবশত হোক, স্বাধীনতা যুদ্ধের উদ্দেশ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং সরাসরি সাম্রাজ্যবাদী ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির হাতের পুতুল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

যদিও আমরা অবশ্যই চাই বাংলাদেশ যত দ্রুত সম্ভব স্বাধীনতা পাক এবং নিশ্চিত যে চুড়ান্ত জয় আমাদেরই হবে, আমরা এটাও জানি যে, মিথ্যা আশা যা বারবার অসত্যে পরিণত হয় তা মানুষের মনোবল ভেঙ্গে দিয়ে তাকে হতাশ করে তোলে। এটা নিশ্চিতভাবে ভারতের শরনার্থী শিবিরে দরিদ্র ও নিঃস্ব মানুষ আর বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গৃহহীন মানুষদের সাথে খুব নিষ্ঠুর রসিকতা।

যে শক্তি বাঙ্গালীদের মধ্যে বিভক্তি ও মতভেদ তৈরী করতে চেষ্টা করছে, তারা স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরু থেকে বলে যাচ্ছে যদি অবিলম্বে একটা সমঝোতায় পৌঁছানো না যায় তবে নেতৃত্ব কমিউনিস্টদের হাতে চলে যাবে। যে কমিটির “সম্পূর্ণ স্বাধীনতা ছাড়া বাংলাদেশের মানুষের কাছে আর কিছুই গ্রহণযোগ্য নয়” শীর্ষক ঘোষণা তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছে, সেই দূতাবাসীয় কমিটি গঠনের পর থেকে তাদের প্রচারণা গতি পেয়েছে। তারা হঠাৎ করেই খুব সহানুভূতিশীল হয়ে পড়েছে আর বলছে যে বর্তমান সঙ্কটের একমাত্র সমাধান হল “পূর্ব পাকিস্তানে পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্বশাসন”। এই অভিমত ছড়ানোর জন্যে বেশ কিছু সংস্থা ও সরকার বিপুল পরিমাণে অর্থ খরচ করছে। পাকিস্তানের কাঠামোর মধ্যে যদি একটি রাজনৈতিক সমাধান গৃহীত না হয় তবে শেখ মুজিবের জীবনের নিশ্চয়তা “কেউ” দিতে পারবে না, এ ধরণের একটা কথা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এসব হুমকিতে কাজ হবে না। কারণ আমাদের প্রিয় নেতা তার জীবনের বিনিময়ে কখনও খুনী, ধর্ষকদের সাথে সমঝোতা করবেন না।

বাংলার সংগ্রামী জনতা কোন ধরণের আপষ কখনও মেনে নেবে না। তারা অনেক রক্ত দিয়েছে আর শেষ মানুষটা দাড়িয়ে থাকা পর্যন্ত তারা লড়াই চালিয়ে যাবে, কিন্তু স্বাধীনতা ছাড়া অন্য কিছু তারা গ্রহণ করবে না। জনগণের মধ্যে ঐক্য সংহত করা ও দূতাবাসীয় কমিটির কর্মসূচী বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে আমাদের উচিত এই দুষ্কৃতিকারী ও প্রতিক্রিয়াশীল সাম্রাজ্যবাদী কালো শক্তিকে উপযুক্ত জবাব দেয়া।

পাকিস্তানের সামরিক জান্তা শক্তিশালী বিদেশী মিত্র দ্বারা সমর্থিত। তাই আমাদের উচিত হবে একটি লম্বা ও দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের জন্যে নিজেদের প্রস্তুত রাখা। এই সংগ্রাম চলাকালীন সময়ে আমাদের অনেক কষ্ট ও পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে কিন্তু আমরা এক মুহূর্তের জন্যেও আমাদের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হব না। আমরা কোনভাবেই শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না।

 

স্থানীয় সংবাদ

টরন্টোতে প্রফেসর মুজাফফর

প্রফেসর মুজাফফর আহমেদ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সভাপতি ও দূতাবাসীয় কমিটির সদস্য, তিনি জাতিসংঘের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে নিউ ইয়র্ক আসেন এবং বাংলাদেশ ফেরত যাবার পথে টরন্টো ঘুরে গেছেন। ৭ই অক্টোবর তিনি টরন্টোতে প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।

তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অগ্রগতি ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে সামগ্রিক অগ্রগতির ব্যাপারে রিপোর্ট করেন। তিনি সর্বশেষ পরিস্থিতির চিত্র সামনে তুলে ধরেন। এই জাতীয় সঙ্কটের মুহূর্তে তিনি ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন যে, যদিও বাংলাদেশের মানুষ এই চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধের শেষ দ্রুতই দেখতে চায় তবে তারা অনেক দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধের জন্যেও তৈরী এবং মাতৃভূমিকে স্বাধীন করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে চেষ্টা করে যাবে।

দক্ষিণ এশিয়া ক্রাইসিস কমিটি

মি. স্ট্যানলি বুরকে, সাবেক সিবিসি সম্প্রচারকারী ও পরিচালক-কে নিয়ে সম্প্রতি টরন্টোতে দক্ষিণ এশিয়া ক্রাইসিস কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য হল বাংলাদেশে আসন্ন দুর্ভিক্ষের ব্যাপারে কানাডিয়ান মানুষকে জানানো। মি. বুরকে কমিটির কার্যক্রম জাতীয় পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে চান। বর্তমানে বিভিন্ন ক্যাম্পাস গ্রুপ মানুষকে সক্রিয়ভাবে শিক্ষিত করার কাজ করছে। “জনগণকে জেগে উঠতে হবে”, মি. বুরকে বলেন,”যখন লক্ষ লক্ষ মানুষ মৃত্যুর জন্যে তৈরী”।

ঘোষণা

২০ অক্টোবর সন্ধ্যা সাতটায় হ্যামিল্টনের ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটিতে বাংলাদেশের ওপর একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, বক্তারা হলেন জাতিসঙ্ঘের বাংলাদেশি প্রতিনিধিদলের সদস্য জনাব এস. এ. সুলতান এবং জনাব মফিজ চৌধুরি।

বাংলাদেশ, ৩১ অক্টোবর, ১৯৭১

সম্পাদকীয়

সাম্প্রতিককালে পত্রিকাগুলো বাংলাদেশ ও ভারত অধ্যুষিত সীমান্তসমূহে ঘটা বিপুল গোলাবষর্ণ নিয়ে প্রতিবেদন করছে। পশ্চিম পাকিস্তানের ভারতের পাশাপাশি গ্রামগুলো থেকে মানুষ সরিয়ে দেয়া হচ্ছে আর মূল সড়কের গাড়ি ও বাসগুলোতে “ভারত নিপাত যাক” লেখা স্টিকার লাগানো হচ্ছে। সীমান্ত এলাকাসমূহে রাতের বেলা সম্পূর্ণ বিদ্যুৎহীন করে রাখা হচ্ছে। শহরের মানুষদেরকে ‘সেহরি’ আর ‘ইফতার’ এর সময় জানাতে আর সাইরেন বাজানো হচ্ছে না। সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই তাদের অবস্থান জোরদার করেছে। “মনে হচ্ছে যুদ্ধ অনিবার্য”।

এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পেছনের কারণ এবং যুদ্ধ লেগে গেলে, তা বাংলাদেশের ওপর কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে ভেবে দেখার সময় হয়েছে। সীমান্ত উত্তেজনা স্বাভাবিক করে তোলার বিষয়ে ইয়াহিয়া খানের সাথে কথা বলার জন্য পশ্চিমের নেতারা গোপনে মিসেস গান্ধীকে অনুরোধ করছেন। কিন্তু তিনি ‘স্পষ্টতই’ উল্লেখ করেছেন যে, এই সমস্যার মুল হল বাংলাদেশের প্রতি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বরতা, আর ভারত হল পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ সমস্যার কোন্দলে পড়া এক হতভাগ্য শিকার। তাছাড়া ইতোমধ্যেই ভারতে পালিয়ে আসা লক্ষাধিক শরণার্থী পরিবার তাদের দুর্দশাগ্রস্ত অর্থনীতির ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করছে। মিসেস গান্ধীর মতে, স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে ইয়াহিয়া খানের বাংলাদেশে ত্রাসের রাজত্ব বন্ধ করে পূর্ব পাকিস্তানের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সাথে সরাসরি কথা বলা উচিত।

ভারত ও বাইরের কিছু মানুষের মতে, নিজেদেরকে এই ঝামেলা থেকে মুক্ত করার জন্য ভারতের একমাত্র উপায় হল বাংলাদেশে বাঙালি সরকার গঠন করে দেয়া। তারা মনে করে, এটি লক্ষাধিক শরণার্থীকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভরণপোষণ দেয়ার চাইতে সাশ্রয়ী হবে। ভারতের মূল সমস্যার প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে তাদের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা ও আনুগত্য প্রকাশ করতে গিয়ে আমরা অনুভব করছি যে এই যুদ্ধ আমাদের ও ভারতের উভয়ের উদ্দেশ্য সাধনেই ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। আমাদের পক্ষ থেকে যুদ্ধটা হল একটি ঔপনিবেশিক শাসন থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করার। বিশেষ কোন পশ্চিম পাকিস্তানির বিরুদ্ধে নয়, বরং সকল শোষকদের বিরুদ্ধেই আমাদের যুদ্ধ।

এমন একটি কাজের নিষ্ফলতা সম্পর্কে মিসেস গান্ধী বুঝতে পেরেছিলেন বলেই ঐ ধরণের সব পরামর্শ তিনি প্রত্যাহার করেছিলেন, কারণ ভারত একটি শান্তিপ্রিয় জাতি। ভারত যদি সত্যই যুদ্ধের পক্ষে থাকত, তাহলে তিনি এতকাল ধরে অপেক্ষা করতেন না।

তাহলে সীমান্ত এলাকাসমূহে কেন এই অস্ত্রের ঝনঝনানি আর যুদ্ধের দামামা? এটা মোটামুটিভাবে পরিষ্কার যে আর্মি জেনারেলরা (তারা যতই বোকা হন না কেন) বুঝতে পেরেছেন যে বাংলাদেশকে জোরপূর্বক দমিয়ে রাখা আসলে অসম্ভব। তারা মুক্তিবাহিনীর হাতে দারুণভাবে পরাজিত হচ্ছে এবং পাকিস্তানের অর্থনীতিও এখন ধ্বংসের শেষ প্রান্তে। তাছাড়া পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণ বাংলাদেশে তাদের সেনাবাহিনীর দৌরাত্ম্যেরর পরিণাম এখন বুঝতে পেরেছে। তাই সীমান্তে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এখন দুই ধরণের উদ্দেশ্য সাধনে বাধ্য।

প্রথমত, পশ্চিম পাকিস্তান ও অন্যান্য দেশের জনগণের মনযোগ ঘোরানোই এর উদ্দেশ্য। পাকিস্তানের একতা ও ন্যায়পরায়ণতা সর্বদাই ‘ভারত বিদ্বেষ’ কিংবা ‘ভারত নির্মূল’ প্রচারণার ওপরে প্রতিষ্ঠিত ছিল। তাই, যুদ্ধের রব তুলে পাকিস্তানের যে অংশই শাসন করুক না কেন, ইয়াহিয়া চেয়েছিল জনগণের মধ্যে একটি একতা গড়ে তোলার।

দ্বিতীয়ত, যুদ্ধের এই তীব্রতা তৈরি করা হয়েছিল বিশ্বসম্প্রদায়কে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত রাখার জন্য ভয় দেখাতে, বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক রূপ দিতে ও বিশ্বের দৃষ্টি মূল বিষয়, অর্থাৎ সাড়ে সাত কোটি জনতার আশা ও স্বাধীনতার অধিকার থেকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে ও নিজেদের নির্মমতা ও বাংলাদেশে বর্বরতা ও ত্রাসের রাজত্বের ঘটনা লুকোতে। ভারতকে আক্রমণ করলে পাকিস্তানের সুবিধাই হয়: তাদের আশা যে এর ফলে ভারতের সাথে সীমান্তের দু’পাশেই যুদ্ধবিরতি সৃষ্টি হবে। এর ফলে বাংলাদেশের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনা তার জন্য সহজ হবে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে মুক্তিবাহিনীর কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে পারবেন। বাঙালিরা নিজেদের স্বাধীনতা অর্জনের পাশাপাশি এই যুদ্ধ থামাতে সাহায্য করা সকল শান্তিপ্রিয় ও গণতান্ত্রিক মানুষের কর্তব্য। সত্য ও সুবিচার পক্ষে থাকলে বাংলাদেশি মুক্তিবাহিনী বিজয় লাভ করবেই।

স্থানীয় খবর

বাংলাদেশ বিষয়ে আলোচনাসভা

হ্যামিল্টন, ৬ অক্টোবর: ৬ অক্টোবর হ্যামিল্টনে ক্যারিবিয়ান ছাত্র সংস্থা ও ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ বিষয়ে একটি আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছিল। জাতিসঙ্ঘের বাংলাদেশি প্রতিনিধিদলের সদস্য জনাব এস এ সুলতান এবং জনাম এস আহমেদ সভার বক্তব্য রাখেন এবং জনতার প্রশ্নের উত্তর দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্র ও শিক্ষক এই সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভা সফলভাবে সম্পন্ন হয়।

পরদিন বক্তারা দু’জনই ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞান অ্যাসোসিয়েশনে বক্তব্য দেন এবং বিকেলে টরন্টোতে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অভ কানাডার অফিসে সদস্যদেরকে আহ্বান জানান। উভয়েই এই জাতীয় সংকট মুহূর্তে সকলের ঐক্য কামনা করেন।

৫ নভেম্বর আমাদের সাথে যোগ দিন।

শনিবার, ৬ নভেম্বর দুপুর ২টায় ভিয়েতনাম সংহতি কমিটির আয়োজনে অ্যালাস্কার অ্যামচিটকায় পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের প্রতিবাদে টরন্টোর বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অভ কানাডা যুদ্ধবিরোধী একটি  মিছিলে যোগ দেবে।

পৃথিবীর সকল নির্যাতিত মানুষের সাথে সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন তাদের নিজস্ব ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও স্লোগান সাথে নিয়ে মিছিলে যোগ দেবে। আমরা কানাডার জনগণকে জানাতে চাই যে আমরা যুদ্ধ চাই না, আমাদের ওপর যুদ্ধ জোর করে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। কুইনস পার্কে বেলা দুইটায় আমাদের মিছিলে যোগদান করুন।

বাংলাদেশি ডাকটিকেট

আমাদের কাছে এখন বাংলাদেশি ডাকটিকিটসমূহের একটি পূর্নাঙ্গ সেট পাওয়া যাবে। ডাকটিকিটের একটি সেট নিতে চাইলে জনাব খানের সাথে যোগাযোগ করুন এই নাম্বারে: ৩৬৩-২৮৩৪। এ অর্থ স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রয়োজনে ব্যয় করা হবে।

(টরন্টোর বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অভ কানাডার পক্ষে প্রচারণা কর্মকর্তার মাধ্যমে সম্পাদিত ও প্রচারিত।)

Scroll to Top